নজর বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি উত্তর পূর্ব দিল্লিতে একের পর এক দাঙ্গা এবং সহিংসতার ঘটনা শুরু হয়, যার ফলে ৪৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২০০ জন আহত হন। নাগরিকত্ব সংশোধন আইন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধক (এনপিআর) সম্পর্কিত বিষয়গুলির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছিল, সেই সময়ে বিজেপি নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক কপিল মিশ্র বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভ বন্ধ করার জন্য একটি চূড়ান্ত সময় সীমা জারি করে বলেন যে বিক্ষোভ বন্ধ করা না হলে তিনি বিষয়টি নিজের হাতে তুলে নেবেন। তার এই মন্তব্যের পরের দিন উত্তর পূর্ব দিল্লিতে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে যার ফলে পুলিশ এবং বেসামরিক নাগরিক মারা যায়।
আর এই দাঙ্গার পরে তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশ। তদন্ত চলছিল, চলছিল যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের নামে চার্জশিট তৈরি। আর এরই মাঝে, আজ দিল্লি পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে যে, ‘কট্টর হিন্দু একতা’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে তার মাধ্যমে গত ফেব্রুয়ারিতে হিংসা ছড়ানাে হয়েছিল উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে।
এবিষয়ে, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দায়ের করে এমনটাই জানাল দিল্লি পুলিশ। ওই চার্জশিটে পুলিশের দাবি, ওই গ্রুপের সাহায্যে ধর্মের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠী মধ্যে শত্রুতা উসকে দেওয়া হয়। এমন আবহ তৈরি করা হয়, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। চার্জশিটে ওই গ্রুপের চ্যাটও তুলে ধরেছে পুলিশ। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই চ্যাটে গ্রুপের সদস্যরা সাম্প্রদায়িক হিংসাত্মক কথাবার্তা বলছে। মাদ্রাসা, মসজিদ ধ্বংস ভাঙা, মুসলিমদের হত্যা করার মতো বিষয় উসকানি দিচ্ছে।
ওই চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্রুপটি তৈরি করা হয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানাের উদ্দেশ্যে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পুরুষােত্তম পাঠকের কাছে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। গােকুলপুরীতে হাসিম আলি নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় ৯ অভিযুক্তের নামে জমা দেওয়া ওই চার্জশিটেই রয়েছে এমন নানা বিস্ফোরক তথ্য।
চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রুপের চ্যাট থেকে জানা যাচ্ছে, অভিযুক্তরা হিন্দুদের উপরে আক্রমণ চালানাের অপরাধে মুসলিমদের শিক্ষা’ দিতে ষড়যন্ত্র করে। লাঠি, তরোয়াল, আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদি জোগাড় করে হাসিম আলি ও তাঁর ভাই আমির খান সহ নজন মুসলিমকে হত্যা করে তারা।