নজর বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহে প্রায় সময়েই মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে সিপিআইএম কে। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের শ্রমজীবী ক্যান্টিন ও কম দামে সবজি বাজার ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আর এবার লোকাল ট্রেন ও গণপরিবহন ব্যাবস্থা চালু করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে চিঠি লিখলেন বাম-কংগ্ৰেস পরিষদীয় দল।
আজ মঙ্গলবার, নবান্নে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে চিঠি দিয়ে লোকাল ট্রেন ও গণপরিবহন চলাচল শুরু করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ও কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা আব্দুল মান্নান।
উক্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, “আবারও আপনাকে জানাতে বাধ্য হচ্ছি। লােকাল ট্রেন এবং গণপরিবহনের ব্যবস্থা অবিলদ্বে চালু করা জরুরী। রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এর আগে বহুবার বলা হলেও সরকারের দিক থেকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।”
সরকারি গণপরিবহন যে যথেষ্ট দূর্বল ও মানুষের উপচে পড়া ভিড় নিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, “আনলক প্রক্রিয়া চলছে। অফিস, কাছারি, বাজার হাট খােলা থাকছে। পেটের দায়ে অথবা জীবন-জীবিকার টানে মানুষকে কাজের সন্ধানে বেরতেই হচ্ছে। অথচ যাতায়াত, যানবাহনের কোন সু-বন্দোবস্ত নেই। সরকারি বেসরকারি গণপরিবহন খুবই দুর্বল। বাসে উপচে পড়া ভীড়, অথচ ভাড়া বেশী। অটো-টোটোর ক্ষেত্রে সমদূরত্বে ভাড়া অনেক বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষ অসহনীয় বিপর্যয়ের মধ্যে। বস্তুত, গণপরিবহনের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে যথাযথ পরিকল্পনার অভাব প্রতিদিন মানুষকে বিপদে ফেলছে। সর্তক বিধি মান্য করেই মানুষের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা জরুরি।”
শারদীয়া দুর্গোৎসব যেন শোকের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, এবিষয়ে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, “ইতিমধ্যেই রাজ্যে শারদ উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সরকারের আর্থিক আনুকুলাে তার বহরও বাড়ছে। এবিষয়ে চিকিৎসক মহল এবং বিশেষজ্ঞগন যথেষ্ট শঙ্কা প্রকাশ করছেন। উৎসবের আবহ যেন মানুষের শােকের কারন না ঘটায় – সে বিষয়ে সতর্ক থাকতেই হবে। কিন্তু এতদসত্বেও দোকান-বাজার, অফিস-কাছারি, উৎসব – সব মিলিয়ে ডীড় বাড়ছেই। এক্ষেত্রে পরিবহনের অগ্রতুলতার জন্য যাতায়াতের ভীড় এবং খরচ দুটোই বাড়ছে। আর্থিকভাবে যারা সচ্ছল তাদের বিভিন্ন বিকল্প থাকলেও, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, গরীব অথবা দৈনিক উপার্জনের উপর নির্ভরশীল মানুষের একমাত্র বিকল্প গণপরিবহন। সরকারি বেসরকারি বাস এবং ট্রেন। চোখের সামনে দিয়ে ট্রেন চলে যাচ্ছে, অথচ জরুরী প্রয়ােজনেও মানুষ উঠতে পারবে না – এ কেমন ব্যবস্থা?”
লোকাল ট্রেন চালু করা নিয়ে তাদের বক্তব্য, “সরকার মনােনিবেশ করুক। ইতিমধ্যেই অনেক দেরী হয়ে গেছে। যেভাবে মেট্রোরেল চালু হয়েছে, একইভাবে অবিলম্বে
লােকাল ট্রেন চালু করাটা জরুরি। নচেৎ দৈনিক কাজের ক্ষেত্র এবং জীবিকা থেকে, বিশেষ করে গরিব, নিম্নবিত্ত মানুষকে দুরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে যা কখনই সমীচীন নয়।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্য স্পেশাল ট্রেন চললেও লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো কথাই বলেনি রাজ্য ও কেন্দ্রী সরকার। যদিও লোকাল ট্রেন চালু করা নিয়ে বেশকিছু স্টেশনে নিত্য যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।