নজর বাংলা ওয়েব ডেস্ক: এক সময় মানুষ ছিল যাযাবর। ছিলনা সীমান্ত, ছিলনা কাঁটাতারের বাঁধন, ছিলনা পরিচয় পত্র। প্রাচীন যাযাবর মানুষ আজ আধুনিক হয়েছে। কাঁটাতারের মাধ্যমে তাকে বেঁধে ফেলা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে, একটি স্বতন্ত্র পরিচয় পত্র। যা নির্দেশিত করে, কোনো একটি দেশের নাগরিকত্ব। এই পরিচয় পত্রের প্রথা এতদিন শুধু মানুষের মধ্যেই দেখা যাচ্ছিল। কিন্ত এবার তা দেখা গেল গৃহপালিত পশুর ক্ষেত্রেও।
“বিবিসি বাংলার” এক প্রতিবেদন সুত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলে কোন বাসিন্দা যদি গরু, মহিষ বা বাছুর পালতে চান তাহলে তাকে সেইসব পশুর নিবন্ধন করাতে হয়। এমনকি এসব পশু বাচ্চা জন্ম দিলে কিংবা পশু বিক্রি করলেও তথ্য হালনাগাদ করতে হয় এবং এই নিয়ম বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন:Job Update: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল নিয়োগ, এখনি আবেদন করুন
কোথায় করা হয় এই জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া? জানা গিয়েছে, বিজিবি ক্যাম্প এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে গিয়ে পশুর মালিকদের নিবন্ধন ও হালনাগাদের এই কাজটি করতে হয়।
তবে নিবন্ধনের এই কাজটি সম্পন্ন করতে পশুর মালিকদের একাধিক জায়গায় যেতে হয়। অনেক নথিপত্রের কাজও রয়েছে। এসব কারণে গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত মানুষের জন্য বিশেষ করে যারা দূরবর্তী অঞ্চলে থাকেন তাদের ব্যাপক দুভোর্গ পোহাতে হয়।
আরও পড়ুন:২০২২ সালের ভোটার তালিকা ডাউনলোড করুন সরাসরি। দেখুন কিছু ভুল রয়ে গেল কিনা!
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামের বাসিন্দা বলেন, “আমার ছ’টা গরু। হাট থেকে কয়টা কিনেছি। আমার ভাই কয়টা দিয়ে গেল। আবার একমাস আগে একটা গাভী বাচ্চা দিয়েছে। এজন্য চারবার আসা যাওয়া করছি। একবার এই অফিসে ওই অফিসে। আমাদের তো কাজ আছে। আমার দেশে আমার গরু রাখতে এতো ঝামেলা কেন বুঝিনি।”
কেন এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া?
জানা গিয়েছে, মূলত সীমান্ত দিয়ে গরু-মহিষের অবৈধ চোরাচালান ঠেকাতে বিশেষ করে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু আনা প্রতিরোধে এমন পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন ইউনিয়নের সাহেবনগর বিওবি ক্যাম্পের সহকারী ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোহাম্মদ আলী আব্বাস।
আরও পড়ুন:Horoscope Today: তুলার ঝোঁক নিয়ন্ত্রণ, কন্যার অর্থ পরিচালনা, দেখুন আজকের রাশিফল
এই প্রথা অবশ্য এক-দুই বছরের নয়, বরং এই প্রথা চলে আসছে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে। গত তিন বছর ধরে এই নিয়ম আরো জোরদার করা হয়েছে।
কিভাবে হয় নিবন্ধন?
জানা গিয়েছে, পশুর মালিককে বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে নতুন কেনা পশুটির বিবরণ, যেমন: রঙ, বয়স, গড়ন, বলদ নাকি গাভী ইত্যাদি তথ্য দিতে হয়। সেইসাথে যে হাট থেকে গরু কিনেছেন সেই রিসিট দেখাতে হয়। এরপর বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার রেজিস্ট্রার খাতায় একটি সিরিয়াল নাম্বারে মালিকের নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বারের পাশে তার কেনা গরুর বিবরণ লিখে রাখেন।
»» বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি এবং গোদাগাড়ী উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।