নজর বাংলা ওয়েব ডেস্ক: করোনা সংক্রমণে কার্যত দিশেহারা গোটা বিশ্ব। প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় প্রত্যেকটি দেশেই জারি হয়েছিল লকডাউন। ভারতবর্ষে এখন চলছে আনলক পর্ব। দেশের সহ রাজ্যের প্রায় সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনে কোনো রকম হেরফের ঘটাইনি রাজ্য সরকার। কার্যত বাড়িতে বসেই তাদের বেতনের সম্পূর্ণ অংশ পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও শিক্ষকদের একটি অংশ চুটিয়ে টিউশন করে যাচ্ছেন! আর এই অভিযোগ পৌঁছেছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। এনিয়েজাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন (NCPCR) রাজ্যের কাছে রিপোর্টও চেয়েছে।
সংবাদ প্রতিদিন সুত্রে খবর, শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, স্কুলশিক্ষকদের টিউশন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোভিড পরিস্থিতিতে বেসরকারি কর্মী, ছোট দোকানদার, হকার, পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশাপাশি প্রবল দুর্দশায় সাধারণ গৃহশিক্ষকরা। উচ্চশিক্ষিত এই বেকাররা অনেকেই ১০০ দিনের কাজ বা সবজি বিক্রির মতো পেশায় চলে যাচ্ছেন। জেলাগুলি থেকে বিক্ষিপ্তভাবে আত্মহত্যার খবরও আসছে। উলটোদিকে স্কুল শিক্ষকরা বাড়িতে বসে অনলাইনে বা কোচিং সেন্টার খুলে চুটিয়ে টিউশন পড়িয়ে যাচ্ছেন। বেতনের সঙ্গে যোগ হচ্ছে টিউশনের হিসাব বহির্ভূত টাকা। তারা ফুলেফেঁপে উঠলেও প্রায় না খেতে পেয়ে অবর্ণনীয় কষ্টে দিনাতিপাত হচ্ছে গৃহশিক্ষকদের।
স্কুলশিক্ষকদের একাংশের এই ক্ষমাহীন দুর্নীতি ও গৃহশিক্ষকের দুর্দশার কথা জানতে পেরেছে এনসিপিসিআর। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন জানিয়েছে, বাংলার প্রত্যেকটি জেলায় তদন্ত হবে। প্রথমে বেছে নেওয়া হয়েছে বীরভূমকে। এই জেলায় সম্প্রতি আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহশিক্ষক। লকডাউনের কবলে প্রবল আর্থিক কষ্টে ছিলেন তিনি। আপাতত বীরভূমের সাধারণ গৃহশিক্ষকদের দুর্দশা ও স্কুল শিক্ষকদের বেআইনি টিউশনের রিপোর্ট চেয়েছে কমিশন। ধাপে ধাপে সমস্ত জেলার রিপোর্ট চাওয়া হবে বলে কমিশনের এক কর্তা জানিয়েছেন।
এবিষয়ে গৃহশিক্ষক উন্নয়ন সমিতির রাজ্য সম্পাদক পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে পাশ করিয়ে দেওয়া হবে এই সরকারি ঘোষণায় অনেক বাবা-মা আমাদের কাছে ছেলেমেয়েদের টিউশন পড়াচ্ছেন না। তবে স্কুল শিক্ষকরা অনলাইনে অথবা অফলাইনে চুটিয়ে টিউশন করছেন। অন্যদিকে সাধারণ গৃহশিক্ষকরা কেউ সবজি বিক্রি করছেন, কেউ ১০০ দিনের কাজে নাম লেখাচ্ছেন আবার হতাশায় কেউ আত্মহত্যাও করছেন।”