নজর বাংলা ওয়েব ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে কার্যত বিধ্বস্ত অবস্থা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তথা দুই মেদিনীপুর ও দুই চব্বিশ পরগণা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন যে, “দুয়ারে সরকার” -এর মত “দুয়ারে ত্রাণ” -এর ব্যাবস্থাও করবেন তিনি। সেই মোতাবেক আজ নবান্নের তরফে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা ও নাগরিক প্রতিরক্ষা তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়।
জানা গিয়েছে, কৃষক, মৎস্যজীবী, হস্তশিল্পীদের জন্য সেখানে ন্যূনতম ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। আগামী ৩ জুন থেকে খুলছে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ শিবির। আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যাবে ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত। ১৯ থেকে ৩১ জুনের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে দেখা হবে। তার পর ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে সকলের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা জমা দেবে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন:
বিপর্যয় মোকাবেলায় সর্বদলীয় বৈঠকের দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর
জনপ্রিয়তা তলানিতে, উত্তরপ্রদেশ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার
ত্রাণ শিবিরে করোনা ছড়িয়ে দাও! বার্তা বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপে
নারদ কাণ্ডে ধৃত ৪ হেভিওয়েট নেতার জামিন মঞ্জুর করল হাইকোর্ট। রইল পাঁচ বিধিনিষেধ।
কি কি থাকছে সেই ঘোষনায়? দেখুন👇👇
১) ফসল নষ্টের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন কৃষকরা। সর্বোচ্চ আড়াই হাজার।
২) ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে যাঁদের ঘরবাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের পরিবার পিছু ২০ হাজার টাকা করে দেবে সরকার। ঘরবাড়ি আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে, পরিবার পিছু ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
৩) ঘূর্ণিঝড়ে গবাদি পশু মারা গিয়ে থাকলে, প্রত্যেক গরু এবং মহিষ পিছু ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, যাতে ওই টাকায় ফের গবাদি পশু কেনা যায়।
৪) ভেড়া, ছাগল এবং শুয়োর মারা গিয়ে থাকলে নতুন কেনার জন্য ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
৫) ক্ষেতে চাষের কাজে বা মালপত্র বহনের কাজে ব্যবহৃত ষাঁড় দুর্যোগে মারা গিয়ে থাকলে এক একটির জন্য ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
৬) বাছুর মারা গিয়ে থাকলে ১৬ হাজার টাকা করে মিলবে।
৭) আয়তনে যাই হোক না কেন, দুর্যোগে পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে ৫ হাজার টাকা করে পাবেন কৃষকরা।
৮) মৎস্যচাষীরা নতুন করে হাঁড়ি কেনার জন্য ৩০০ টাকা করে পাবেন। মাছ ধরার জাল কিনতে ২ হাজার ৬০০ টাকা করেও পাবেন তাঁরা। ঝড়ের দাপটে নৌকো সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতি নৌকার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। নৌকা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৫ হাজার টাকা করে পাবেন তাঁরা।
৯) হস্তশিল্পীদের যন্ত্রপাতি কিনতে মাথা পিছু ৪ হাজার ১০০ টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার। কাঁচামাল কিনতেও মাথা পিছু ৪ হাজার ১০০ টাকা করে পাবেন তাঁরা। গুদামঘর, দোকান বা জিনিসপত্র মজুত রাখার জায়গা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ‘ইউনিট’ প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ এই সমস্ত বিধ্বস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শনে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক জায়গা স্থলপথে, আকাশপথে ঘুরে দেখবেন তিনি। রয়েছে একগুচ্ছ প্রশাসনিক বৈঠকও। অপরদিকে আজই বিপর্যস্ত এলাকা খতিয়ে দেগতে পূর্ব মেদিনীপুর এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।