নজর বাংলা সম্পাদকীয় ডেস্ক: রাজ্য রাজনীতিতে কার্যত তোলপাড় চলছে শুভেন্দু অধিকারী কে নিয়ে। শুভেন্দু অধিকারী যখন দল ছাড়ার খেলায় মগ্ন তখন তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে শুভেন্দু ধরে রাখতে। আর “শুভেন্দু অধিকারী” কে ধরে রাখা নিয়েই কাল্পনিক কথপকথন চলছে “তৃণমূল কংগ্রেস” ও “কংগ্রেস” -এর মধ্যে।
🍃তৃণমূল : “শুভেন্দু তুমি ভুলে যেও না তোমাকে কিন্তু মমতা ব্যানার্জী তৈরি করেছিলেন। তুমি কিন্তু কিছুই ছিলে না ”
🖐️কংগ্রেস : “সে তো মমতা ব্যানার্জীও কিছু ছিলেন না। ওঁকে তো কংগ্রেস তৈরি করেছিল ”
🍃তৃণমূল : “না। মমতা ব্যানার্জী নিজে থেকে লড়ে লড়ে উঠেছিলেন। সিপিএমের বিরুদ্ধে সেই লড়াই। … সে লড়াই ভোলা যাবে না ”
🖐️কংগ্রেস : “কিন্তু মমতা ব্যানার্জী সাংসদ হওয়ার আগেই তো শিশিরবাবু কংগ্রেসের টিকিটে কাঁথির বিধায়ক হয়েছিলেন। তাহলে শুভেন্দুকে মমতা তৈরি করলেন কি করে?”
🍃তৃণমূল : “তৃণমূলের টিকিটে যারা দাঁড়ায় সবাইকেই মমতা ব্যানার্জী জেতান, সে নিজের জোরে জিতলেও কৃতিত্ব সেই একজনেরই। জননেত্রী।”
🖐️কংগ্রেস : “কিন্তু ১৯৮৪ সালে তো যাদবপুর কেন্দ্রে মমতা ব্যানার্জীকে কেউ চিনতো না। ওঁকে কি ইন্দিরা গান্ধীর ঢেউ জেতায় নি ?”
🍃তৃণমূল : “ওই আসনে কংগ্রেসের কেউ দাঁড়াতে রাজি হচ্ছিলেন না। মমতা ব্যানার্জী দাঁড়ালেন। আর মানুষ দেখেই বুঝলো, এই তো জননেত্রী এসে গেছেন। সিপিএমের বিরুদ্ধে ওনার লড়াই …. সেই ডান্ডার বারি খাওয়া। সেই নন্দীগ্রাম। ”
🖐️কংগ্রেস : ” কিন্তু ডান্ডার বারি তো ১৯৯০-এ। আর নন্দীগ্রাম তো ২০০৭।”
🍃তৃণমূল : “কংগ্রেস হলো সিপিএমের বি – টিম। সিপিএমের দালালি করে কংগ্রেস। আমাদের দিদির লড়াই -ই ওঁকে ১৯৮৪ সালে জিতিয়েছিলো ”
🖐️কংগ্রেস : “১৯৮৪ সালের আগে উনি কোন লড়াইটি লড়েছিলেন ?”
🍃তৃণমূল : “বস্তি থেকে উঠে আসা বঙ্গেশ্বরী। হরিণঘাটার দুধে জল মিশিয়ে বিক্রি করে সংসার চালানো বঙ্গমাতা। ছাত্র পরিষদ – যুব কংগ্রেস নেত্রী হিসাবে রাজীব গান্ধীর আস্থাভাজন অগ্নিকন্যা ”
🖐️কংগ্রেস : “১৯৮৪ সালের আগে কি ?”
🍃তৃণমূল : “সেটা গিয়ে কালীঘাটের ওঁর পাড়ার লোকদের জিজ্ঞাসা করো। বাচ্চা জন্মে “বাবা”, “কাকা”, “মামা” ডাকে। দিদি বলে উঠেছিলেন , “লাহা””
🖐️কংগ্রেস : “লাহা ?”
🍃তৃণমূল : “লাল হাঠাও।.. আসলে দিদি তখন ছোট তো। চুষিকাঠির ফাঁক দিয়ে ঐটুকুনই তখন বলতে পেরেছিলেন ”
🖐️কংগ্রেস : “তার মানে দিদি জন্মেই সিপিএমকে হঠানোর ডাক দিয়েছিলেন ? কিন্তু ১৯৫৫ সালে রাজ্যে তো কংগ্রেস সরকার ছিল ? ”
🍃তৃণমূল (এবারে খানিক চিন্তা করে ) : “কিন্তু জ্যোতি বাবুর নেতৃত্বে সিপিএমের অত্যাচার রবীন্দ্রনাথ – নজরুলের সময়েও ছিল। রবীন্দ্রনাথ এসে সেই লিখেছিলেন না, “দুর্গম গিরি কান্তার মরু…” দিদিই এসে মুক্ত করেন। ”
🖐️কংগ্রেস : ” রবীন্দ্রনাথ দুর্গম গিরি কান্তার মরু কবে লিখলেন ?”
🍃তৃণমূল : “চুপ কর , শালা। ..সিপিএমের দালাল ”
🖐️কংগ্রেস : ” শুভেন্দুর কি কোনো অবদানই নেই ? ওঁর বাবা তো কেন্দ্রে UPA সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। ”
🍃তৃণমূল : “সবই দিদির নির্দেশে। উনিই ২৯৪। ”
🖐️কংগ্রেস : “তার মানে দল থেকে বেরোলে ২৯৪ হওয়া যায় ? শুভেন্দু বেরোলে কি হতে পারবেন ?”
🍃তৃণমূল (খানিকটা থতমত খেয়ে) : “দিদির মতো হওয়া সম্ভব নয়। দিদি দিদিই।”
🖐️কংগ্রেস : “সে তো আমাদের মামারাও বলতেন যে কংগ্রেস থেকে বেরোলে নাকি মমতা সফল হবেন না ”
🍃তৃণমূল : “তোরা চুপ করবি ? দিদির নির্দেশে আমরা শুভেন্দুকে ‘০’ করে ছাড়বো। মমতা ব্যানার্জী জিন্দাবাদ। ”
(লক্ষণীয়: তৃণমূল ও কংগ্রেসের নামের আগে ব্যাবহৃত প্রতীক কোনো অর্থ বহন করে না। শুধু মাত্র মনোযোগ দেওয়ার জন্য ব্যাবহার করা হয়েছে)
✍️কলমে- সায়ক ঘোষ চৌধুরী (রাজনৈতিক বিশ্লেষক)