নজর বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক: “দুর্নীতির ফলে ক্ষতি হয় উন্নয়নের। এর ফলে সমাজে বৈষম্যেরও সৃষ্টি হয়। এই ধরনের ঘটনা রুখতে তাই স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ ও উত্তর দিতে সমর্থ প্রশাসন তৈরি করতে হবে।” গত মঙ্গলবার ঠিক এই ভাষাতেই দূর্নীতির বিরুদ্ধে বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর আজ, উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেদ্র সিং রাওয়াতের বিরুদ্ধে নোট বাতিলের সময় ঘুষ নেওয়ার অপরাধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট।
সংবাদ প্রতিদিন সুত্রে জানা গিয়েছে, নোট বাতিলের সময় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেন উত্তরাখণ্ডের দুই সাংবাদিক। এবং এই অভিযোগের পরই মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই সাংবাদিক দুজন। এর পর আজ, মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেদ্র সিং রাওয়াতের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট। পাশাপাশি এক ফেসবুক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
ঘটনার সুত্রপাত ২০১৬ সালে নোট বাতিলের সময়। ত্রিবেন্দ্র রাওয়াত তখন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি (BJP) পর্যবেক্ষক ছিলেন। অভিযোগ সেসময় এক ব্যক্তিকে ‘গো সেবা আয়োগে’র প্রধান করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছেন রাওয়াত। সেই ঘুষের টাকা আবার নিজের অ্যাকাউন্টে না নিয়ে, নিজের আত্মীয়দের একাধিক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করানোর অভিযোগ উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগে উমেশ কুমার শর্মা নামে এক সাংবাদিক এক ফেসবুক পোস্টে এই কেলেঙ্কারির কথা প্রকাশ্যে আনেন। যা নিয়ে সরগরম হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতি। ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে উত্তরাখন্ড পুলিশ। যার বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে পালটা আবেদন করেন দুই সাংবাদিক।
সাংবাদিকদের দাবি মেনে হাই কোর্টের বিচারপতি রবীন্দ্র মৈথানি মুখ্যমন্ত্রী রাওয়াতের বিরুদ্ধে সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে উমেশ কুমার শর্মা নামের ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হওয়া এফআইআর খারিজ করে দিয়েছে আদালত। যদিও, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। এবং হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের মিডিয়া উপদেষ্টা দাবি করেছেন, তাঁরা হাই কোর্টের রায়কে সম্মান করেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সত্যিটা প্রকাশ্যে আসবে। সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে। খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি।