“শুভেন্দু বিজেপিতে ? তৃণমূলের শেষের সূচনা ? “

Breaking News সম্পাদকীয়

নজর বাংলা সম্পাদকীয় ডেস্ক: শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যান বা কংগ্রেসে আসুন, তৃণমূল ছাড়লেই কংগ্রেসের সুবিধা। ..

তৃণমূলের “শেষের শুরু” হয়ে যাবে সেক্ষেত্রে। ..

“কিন্তু তুমি তো বলেছিলে যে শুভেন্দু অধিকারী কংগ্রেসে আসবে ?”
উঃ শুভেন্দু অধিকারীর আর তর সইছে না। .. সে ভাবছে যে এবারেই এস্পার – ওস্পার করে দেবে। .. কিন্তু আমি মনে করি যে, “ঘটমান বর্তমান”-এর থেকে একটু দূরে দেখলে শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে কংগ্রেসই ঠিক দল। .. ওর বয়স অধীরদার চেয়ে ১৫ বছর কম। কাজেই আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীও হওয়া প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু ওর নামে কি কি কেস আছে আমরা জানি না… মুকুল রায়ের চক্করে একবার পড়ে গেলে বিপদে পড়বে। .. কংগ্রেসের মধ্যে একজন নেতার কাজ করার সুবিধা। কিন্তু বিজেপি মাথায় আরএসএসকে চাপাবেই। ..দিলীপ ঘোষদের গ্রাম সভা আসন জেতারও অকাত নাই। .. সাংসদ হয়ে বসে আছেন।

“শুভেন্দুই কি বিজেপির সেই মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীপদের দাবিদার হতে পারেন ?”
উঃ আমি মনে করি না যে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী সামনে রেখে লড়তে নামবে। শুভেন্দু যেটা করবেন সেটা হলো, সারা পশ্চিমবাংলা জুড়ে বিজেপির টিকিটে ওঁর ৮০ জন অনুগামীকে প্রার্থী করার চেষ্টা করবেন। বিজেপি ওই সংখ্যাটা ৪০ এ রাখতে চাইবে।.. এই নিয়েই “রাজনৈতিক টানাপোড়েন” হবে। ..

“শুভেন্দু কি নিজের পার্টি তৈরি করবেন মমতা যেমন করেছিলেন ?”
উঃ ঐরকম মূর্খামি করলে কোনো লাভ করতে পারবেন না… ওঁর symbol চেনাতে পারবেন না… আর বিজেপি বা কেন ২৯৪ টি আসনেই তাদের প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ ছাড়বে ? ওই “গরু”, “গাধা”, “আমপাতা” চিহ্নের ভরসায় ? আর শুভেন্দু কিন্তু মমতা ব্যানার্জী নন। মমতা ব্যানার্জী অজিত পাঁজা , কৃষ্ণা বসুর মতো জনপ্রিয় সাংসদদের নিয়ে বেরিয়েছিলেন। শুভেন্দু সেখানে মোটামুটিভাবে একা। ওঁর কলকাতার উপরে তেমন কোনো প্রভাব নেই। মমতার কলকাতার সাংস্কৃতিক জগতে ভালো প্রভাব ছিল।

“তৃণমূলের কিভাবে ক্ষতি হবে ?”
উঃ মমতা যেমন কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে সিপিএমের চেয়ে কংগ্রেসের ক্ষতি করেছিলেন বেশি, দিনরাত কংগ্রেসকে ভেঙ্গিয়ে যেতেন নিজের পৃথক অস্তিত্ব জানান দিতে, শুভেন্দুর দলের লোকেরাও সেটাই করবে। .. জেলায় জেলায় তৃণমূলকে তিষ্ঠোতে দেবে না… যেভাবে কংগ্রেসের জঠর থেকে জন্ম নেওয়ার ফলে মমতাকে সামলানো কঠিন ছিল, শুভেন্দুর বেরোনোটাও মমতার সেই “দেখ কেমন লাগে” moment… শুভেন্দু তৃণমূলের সংগঠন গুঁড়িয়ে দেবে বেশি। ..

“কিন্তু এই ক্ষেত্রে তো লড়াইটা তৃণমূল বনাম বিজেপি হবে। কংগ্রেসের কি লাভ হবে ?”
উঃ কংগ্রেসের লক্ষ্য, পশ্চিমবঙ্গের ৩০% মুসলিমকে কংগ্রেসের পেছনে আনা। ওই ভোটটা তৃণমূল – কংগ্রেস – সিপিএম এই ৩ টি ভাগে ভাগ হচ্ছে। #CPM_০ যদি আমরা ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে একবার করে দিতে পারি, “সিপিএম” আর কোনো option থাকবে না… তখন তৃণমূলের প্রতিটা “ক্ষতি”, কংগ্রেসের “লাভ”… মুসলমানরা বিজেপির দিকে যেতে পারবেন না… যে যে জেলা গুলো বিজেপি তৃণমূলকে তাড়িয়ে “sanitize” করবে, সেই সেই জেলাতে “কংগ্রেসের পুনরুত্থান” দেখা যাবে।

“কিন্তু কংগ্রেস তো সিপিএমের সঙ্গে জোট করছে। সিপিএমের ক্যাডাররা নাচানাচি করছে। তোমার কথা তো অধীরদা শুনছেন না ”
উঃ এখনও কি “জোট”-টা হয়ে গেছে ? এখনও তো “জেলা ভিত্তিক আসনের দাবি” তো কংগ্রেস করেই নি। .. “১৭৭ টি আসন” দেখতে পেলেই সিপিএম সব ফেলে “#CPM_০” হতে পালিয়ে যাবে। বিরাট “arrogant” পার্টি। এখনও ভেবে চলেছে যে ক্ষমতায় কোনোদিন ফিরে আসবে বুঝি। ওদের ego -তে ওই “কংগ্রেস ১৭৭” নেওয়া সম্ভব হবে না… ওদের মধ্যের “উচ্চিংড়ে” গুলো বেশি লাফাবে যেগুলো আসলে “শুঁয়োপোকা”…”আমরা আত্মহত্যা করবো। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবো না। ” ..কোনো বোকা লোককে শেষ করার জন্যে তার Ego -কে hurt করার দরকার আছে। .. আমরা জানি যে ওই সব “জোট”-এ কি খেলা আমাদের খেলতে হবে।

“যদি বিজেপি AIMIM -কে খাড়া করে মুসলিম ভোট কাটার জন্যে ?”
উঃ পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস যদি দেখা যায়, দেখা যাবে যে পশ্চিমবঙ্গে ঐরকম “মুসলিম খেপাও পার্টি” আগেও তৈরি হয়েছে। মুসলিম লীগ , SPDI , PDSI ..পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা ভোট দেন নি। . আর সেখানে AIMIM তো “ঊর্দু”… কাজেই AIMIM কংগ্রেসের “মুসলিম ১০০%” এজেন্ডাতে কোনো বাধা নয়।

“শেষ প্রশ্ন, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন জিতবে কে ?”
উঃ শুভেন্দু বেরোলেও তৃণমূলের advantage … কিন্তু #CPM_০ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি তৃণমূলও এই নির্বাচনে কোনোক্রমে উড়ে যায়, কংগ্রেসের পক্ষে সোনায় সোহাগা। যেখানে তৃণমূল উড়বে, সেখানে লড়াই সোজাসুজি “বিজেপি বনাম কংগ্রেস” শুরু হবে। শুভেন্দু “মেদিনীপুর puzzle”-এর অংশ , যে অংশটি বিজেপির দিকে না ঢুকলে বিজেপির “৫০ টি আসন”-এর বেশি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু এবারে সমীকরণ বিজেপির পক্ষে খানিকটা শক্তিশালী হলো। মমতা ব্যানার্জী নেতা তুলতে পারেন নি। “কংগ্রেস ভাঙ্গানো বুড়ো নেতা”-দের এইটাই শেষ নির্বাচন। কাজেই তৃণমূলের “১০০০ বছরের শাসন” (Tausendjähriges Reich) -এর পতন অবশ্যম্ভাবী।

কলমে- সায়ক ঘোষ চৌধুরী (রাজনৈতিক বিশ্লেষক)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *