নজর বাংলা ওয়েব ডেস্ক: আজকের একটা খবর শুনে আমরা প্রায় সবাই আনন্দে আত্মহারা! কৃষি বিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নাকি কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিমকোর্টে সজোরে থাপ্পড় খেয়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় মনে হচ্ছে আনন্দের বন্যা বইছে। আমি বলি এতে আনন্দের কিছু নেই। হতে পারে এটাও একটা ষড়যন্ত্র। মাফ করবেন অনেক ক্ষেত্রে পজিটিভ কিছু থাকলেও আমি নেগেটিভ ভাবনাটা না ভেবে পারিনা। কেন ভাবতে পারি না? তার কারণ গুলি হল…
১। প্রধান বিচারপতি ব্যবহার করেছেন “Put on hold”. এর মানে স্থগিত রাখা। আচ্ছা বলুনতো যেখানে বিল তিনটি পুরোপুরি বাতিলের দাবী করা হচ্ছে বারবার, সেখানে স্থগিত করার উপর কেন জোর দিলেন বিচারপতি?
২। স্থগিত করে আন্দোলন কে থামিয়ে দেওয়ার কোন চক্রান্ত নয়তো? স্থগিত মানে আপাতত বন্ধ। পরেতো যেকোনো মুহুর্তে আবার চলে আসতে পারে এই বিল। মনে রাখবেন #সাসপেন্ড মানে চাকুরী যাওয়া নয়, আবার কিছুদিন পর জয়েন হবে। একইভাবে স্থগিত মানে বাতিল নয়, আবার পরে নিয়ে আসা হবে।
৩। কৃষক আন্দোলন চলছে। স্থগিত করার খুশিতে কৃষকেরা নিজ নিজ বাড়ি চলে যাওয়ার পর আবার যদি এই বিল আনা হয়, বৃহত্তর আন্দোলন কৃষকেরা করতে পারবেন তার কোন গ্যারান্টি আছে? কারণ দ্বিতীয় বার যেকোনো আন্দোলন সংগঠিত করা বিশাল কঠিন বলে আমি মনে করি।
৪। আমরা সশরীরে কৃষক দের আন্দোলনের পাশে হয়তো যেতে পারছিনা। কিন্তু এই আন্দোলন একবার স্তিমিত হয়ে গেলে দ্বিতীয় বার সরকার আটঘাট বেধে বিল পাশ করবে গ্যারান্টি। মিলিয়ে নিয়েন।
৫। তাই আমি মনে করি কৃষক দের উচিত কোন সুপ্রিমকোর্ট বা নেতা-নেত্রীর মিষ্টি কথায় বা বিলের বিপক্ষে কথায় খুশী হয়ে আন্দোলন না থামিয়ে, সম্পূর্ণ কৃষি বিল বাতিলের লিখিত কপি ছাড়া আন্দোলন থামানো উচিত হবেনা। বিশ্বাস নেই বিশ্বাসঘাতক ও ব্রাম্মণ্যবাদী শাসকদের।
৬। সুপ্রিমকোর্ট আর একটা মূল্যবান কথা বলেছে রক্ত বন্যা হলে দায়িত্ব কে নেবে? ভালো কথা। আচ্ছা বলুনতো দিল্লী গণহত্যা, অসংখ্য মব লিঞ্চিং, বাবরী ধ্বংস ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু রক্ত বন্য বয়ে গেছে। সেগুলোর কোন বিচার হয়েছে কি?
৭। সবশেষে বলি আর বিশ্বাস নয়। যাকে বিশ্বাস করা হয়, তাকে বিশ্বস্ত হতে হয় ও বিশ্বাসের মূল্য দিতে হয়। কিন্তু হায়! হচ্ছে তার উল্টো। তাই আর কথার প্রলোভনে না পড়ে অধিকার আদায় করে নিতে হবে। কাজ করতে হবে একসাথে।
✍️কলমে: নজর বাংলা’র প্রতিনিধি কতৃক ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।